ঢাকা ০৬:১১ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৭ মে ২০২৪, ৩ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম
উপজেলা পর্যায়ে সরকারি বিদ্যমান সেবা বিষয়ে ওরিয়েন্টেশন অনুষ্ঠিত মদনে প্রাণিসম্পদের উদ্যোগে মোরগ ও ছাগলের খাদ্য বিতরণ ইটনায় সরকারি বিদ্যমান সেবা বিষয়ে অবহিতকরণ সভা অনুষ্ঠিত মদনে সংবাদ প্রকাশের পর স্কুল কর্তৃপক্ষের ঘুম ভাঙ্গল বিদ্যালয় প্রাঙ্গন দখল করে ঘর নির্মাণ করছেন শিক্ষক রাজধানীতে পার্বত্য জেলার সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যসমৃদ্ধ বিপনী বিতান উদ্বোধন করেন: পার্বত্য প্রতিমন্ত্রী সীমান্ত সড়ক পশ্চাদপদ পার্বত্য অঞ্চলকে উন্নয়নের স্রোতধারায় একীভূত করেছে মদন উপজেলা ছাত্র কল্যাণ পরিষদের সভাপতি সায়েম সাধারণ সম্পাদক আরিফ মদনে ফের বয়রাহালা ব্রীজের এপ্রোচ দখল করে ঘর নির্মাণ মদনে জমি সংক্রান্ত বিরোধের জেরে কৃষককে হত্যার চেষ্টা

ইতালির বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০৯:৫০:৫৫ অপরাহ্ন, বুধবার, ৫ জুলাই ২০১৭
  • ৩৪৫ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ  ইতালির অধিকাংশ বিশ্ববিদ্যালয়ে আবাসিক হল বা এ রকম কোনো ব্যবস্থা নেই। তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি হাউজিং অফিস থাকে। এখান থেকে প্রয়োজনীয় তথ্য দিয়ে সাহায্য করেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা। বাজারদরের চেয়ে কম খরচে থাকার ব্যবস্থা করে দেন তারা।
বড় শহরগুলোয় অ্যাপার্টমেন্টের ভাড়া স্বাভাবিকভাবেই বেশি। এটা ৩০০ থেকে ১ হাজার ইউরো হতে পারে। সাধারণত অন্তত এক বছরের জন্য ভাড়া নিতে হয়। তবে বিশ্ববিদ্যালয় শহরগুলোয় স্বল্প মেয়াদে আসবাব সজ্জিত কক্ষ ভাড়া পাওয়া যায়। পুরো অ্যাপার্টমেন্ট ভাড়া না নিয়ে একটি কক্ষও ভাড়া নিতে পারেন শিক্ষার্থীরা। অবশ্য পত্রিকার বিজ্ঞাপন দেখে কিংবা রিয়েল এস্টেট এজেন্সির সঙ্গে যোগাযোগ করেও আবাসনের ব্যবস্থা করে নেয়া যায়।
আবহাওয়া : ইউরোপের মূল ভূখ- থেকে বুটের মতো করে ভূমধ্যসাগরে বেরিয়ে আসা ভূখ- হচ্ছে ইতালি। উত্তর ও দক্ষিণাঞ্চলের আবহাওয়ায় তাই কিছুটা তফাত দেখা যায়। উষ্ণ গ্রীষ্ম এবং শীতল শীতকাল উত্তর ইতালির বৈশিষ্ট্য। তবে শীতকালে দিনের তাপমাত্রা সচরাচর হিমাঙ্কের নিচে নামে না। আর দক্ষিণাঞ্চলে শীতের প্রভাব ততটা বেশি নয়। গ্রীষ্মকালটা শুষ্ক এবং বেশ গরম। তবে পার্বত্য অঞ্চলগুলোয় দীর্ঘ শীতকাল পরিলক্ষিত হয়।
ইতালি যাওয়া : ইউরোপ এবং সারা বিশ্বের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ শহরগুলোর সঙ্গে সরাসরি ফ্লাইট আছে। এছাড়া লন্ডন, আমস্টার্ডাম, ফ্রাঙ্কফুর্ট এবং প্যারিস হয়েও ইতালি প্রবেশ করা যায়। বোলোগনা, ফ্লোরেন্স, নেপলস ইত্যাদি শহরের বিমানবন্দরগুলোর সঙ্গে ইউরোপের বিভিন্ন শহরের সরাসরি বিমান যোগাযোগ আছে। বেশকিছু সাশ্রয়ী বিমান সংস্থাও ফ্লাইট পরিচালনা করছে ইতালিতে।
ইউরোপের শহরগুলো থেকে রেল বা বাসে চড়েও ইতালি যাওয়া যায়। ইতালিজুড়ে বিস্তৃত সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা থাকায় সাধারণ গাড়িতে চড়েই দেশটির বিভিন্ন প্রান্তে পৌঁছে যাওয়া যায়।
পড়াশোনার জন্য ইতালি প্রবেশের ক্ষেত্রে যা প্রয়োজন : ভিসা সহকারে পাসপোর্ট;
নগদ অর্থ, ট্রাভেলার্স চেক, ক্রেডিট কার্ড, ইত্যাদি;
বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির অনুমতিপত্র;
প্রয়োজনীয় হেলথ ডকুমেন্ট;
ইতালি থাকার জন্য প্রয়োজনীয় অর্থ আছে তার প্রমাণপত্র;
এছাড়া সংশ্লিষ্ট বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনার জন্য আরও কোনো কাগজপত্র লাগবে কিনা, সেদিকে লক্ষ রাখতে হবে।
পড়াশোনার জন্য : পড়াশোনার জন্য ইতালি প্রবেশ করতে ইউরোপীয় শিক্ষার্থীদের ভিসা লাগে না। কিন্তু ইউরোপের বাইরের দেশ হওয়ায় বাংলাদেশের শিক্ষার্থীদের ভিসা প্রয়োজন হয় এবং সেটা ইতালি যাওয়ার আগেই সংগ্রহ করতে হয়।
ইতালি প্রবেশের ৮ দিনের মধ্যে পুলিশকে অবহিত করতে হবে, বাড়িভাড়া নেয়ার পূর্বশর্ত এটি।
কেমন পোশাক নিতে হবে : চারটি ঋতুর প্রভাব অনুভূত হয় পুরো ইতালিতেই। তবে উত্তর ও দক্ষিণাঞ্চলের মধ্যে আবহাওয়ায় কিছুটা পার্থক্য আছে। দক্ষিণে শীত ততটা প্রবল না হলেও উত্তরে বেশ শীত পড়ে। পুরো ইতালিতেই গ্রীষ্মকালটা বেশ উষ্ণ। তবে গ্রীষ্মের দৈর্ঘ্য দক্ষিণে তুলনামূলক বেশি। বসন্ত এবং শরতে বৃষ্টি বেশি হয়, উত্তরাঞ্চল তুলনামূলকভাবে বেশি আর্দ্র।
কি ধরনের পোশাক নিতে হবে সে সংক্রান্ত পরামর্শ বিশ্ববিদ্যালগুলোর তরফ থেকে দেয়া হয়। তবে উত্তর বা দক্ষিণÑ গন্তব্য যেখানেই হোক না কেন, শীতের পোশাক কিছুটা লাগবেই।
শিক্ষার্থীদের জন্য বিশেষ সেবা : বিদেশে পড়তে যাওয়াজনিত একটি উত্তেজনা শিক্ষার্থীদের মাঝে কাজ করে ঠিকই, কিন্তু নতুন জায়গায় গিয়ে কিছুটা ছন্দপতন ঘটতে পারে। নতুন দেশের জীবনযাপন পদ্ধতির সঙ্গে মানিয়ে নেয়া কঠিন হতে পারে। একটি পর্যায়ে প্রায় সব শিক্ষার্থীই গৃহকাতর বা হোমসিক হয়ে পড়ে। এসব পরিস্থিতিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ইন্টারন্যাশনাল অফিসের সঙ্গে কথা বলা যেতে পারে। অধিকাংশ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা কার্যক্রমের শুরুতে একটি পরিচিতিমূলক কর্মসূচি থাকে। বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা ও সেবা সম্পর্কে অবহিত করা হয় শিক্ষার্থীদের।
যাতায়াত : ইতালির গণপরিবহন ব্যবস্থা বেশ ভালো এবং সস্তা। ইতালির শহরগুলোয় যাতায়াতের জন্য গণপরিবহনই উত্তম পন্থা। কারণ পার্কিং ও সড়কপথের টোল এখানে খুব বেশি। গণপরিবহনে চড়তে একটি টিকিট কিনলে খরচ বেশি পড়বে। এক সপ্তাহ বা এক মাসের টিকিট একসঙ্গে কেনা সাশ্রয়ী। বাসে কোনো টিকিট বিক্রি করা হয় না। পত্রিকা বা সিগারেট বিক্রেতারা এসব টিকিট বিক্রি করে। ট্রেনে বা বাসে চড়ার আগেই টিকিটে সিল নিতে হবে।
জীবনযাত্রার ব্যয় : ইতালির বড় শহর, পর্যটন শহর, বিশেষ করে উত্তরাঞ্চলের শহরগুলোয় জীবনযাত্রার ব্যয় তুলনামূলক বেশি।
থাকা-খাওয়া, যাতায়াত, টেলিফোন এবং অন্যান্য খরচসহ একজন শিক্ষার্থীর মাসিক ব্যয় ১ হাজার থেকে ১ হাজার ৫০০ ইউরো হতে পারে। (২০১৪ সালে ইতালির সরকারি ওয়েবসাইট থেকে প্রাপ্ত তথ্য)।
বাংলাদেশের মতো ইউরোপের বাইরের দেশ থেকে যারা যাবেন, তারা যাওয়ার আগেই বেসরকারি স্বাস্থ্য বীমার ব্যবস্থা করতে পারবেন। ইতালিতে স্বাস্থ্য বীমার সুবিধা পাওয়া যাবে কিনা আগেই ইতালি দূতাবাস থেকে সে সম্পর্কে নিশ্চিত হতে হবে। ইতালির চিকিৎসাসেবা এমনিতে বেশ ব্যয়বহুল।
পড়াশোনার পাশাপাশি কাজ : ইউরোপীয় শিক্ষার্থীরা ওয়ার্ক পারমিট ছাড়াই কাজ করতে পারে ইতালিতে। কিন্তু বাংলাদশে বা ইউরোপের বাইরের অন্যান্য দেশের শিক্ষার্থীদের জন্য কাজের সুযোগ কম। শিক্ষার্থীদের জন্য ওয়ার্ক পারমিট জোগাড় করাটা বেশ কঠিন। একটি নিয়োগপত্র পুলিশকে দিতে হয়। কাজটা করতে হয় চাকরিদাতাকেই। আবার অনেক ক্ষেত্রে ভিসায় কাজ করার অনুমতি দেয়া হয় না।
এখন ইতালিতে সরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ৫৮টি, সরকার অনুমোদিত বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ১৭টি এবং বিদেশিদের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় দুইটি।
সেমিস্টার পদ্ধতি ও অন্যান্য : দুই সেমিস্টার মিলিয়ে এক শিক্ষাবর্ষ ধরা হয় ইতালিতে। প্রথম সেমিস্টার শুরু হয় সেপ্টেম্বর-অক্টোবরে আর শেষ হয় জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারিতে। দ্বিতীয় সেমিস্টার শুরু হয় ফেব্রুয়ারিতে আর শেষ হয় জুলাইয়ে। ঠিক কোন তারিখে সেমিস্টার শুরু হবে সেটা বিশ্ববিদ্যালয়ের ওপর নির্ভর করে। প্রতি সেমিস্টারের দৈর্ঘ্য ২০ সপ্তাহ। ১৪ সপ্তাহ ক্লাসের জন্য আর ৬ সপ্তাহ পরীক্ষার জন্য বরাদ্দ থাকে।
বছরে গড়ে ৮৫০ থেকে ১ হাজার ইউরো খরচ হবে। তবে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর খরচ অনেক বেশি হয়ে থাকে। বৃত্তি, আর্থিক সাহায্য, আবাসনসহ অন্যান্য ক্ষেত্রে ইতালীয় এবং বিদেশি শিক্ষার্থীদের জন্য একই নিয়ম প্রযোজ্য। শিক্ষার্থীর প্রয়োজন ও ফলাফলই বিবেচনার মাপকাঠি।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

উপজেলা পর্যায়ে সরকারি বিদ্যমান সেবা বিষয়ে ওরিয়েন্টেশন অনুষ্ঠিত

ইতালির বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা

আপডেট টাইম : ০৯:৫০:৫৫ অপরাহ্ন, বুধবার, ৫ জুলাই ২০১৭

হাওর বার্তা ডেস্কঃ  ইতালির অধিকাংশ বিশ্ববিদ্যালয়ে আবাসিক হল বা এ রকম কোনো ব্যবস্থা নেই। তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি হাউজিং অফিস থাকে। এখান থেকে প্রয়োজনীয় তথ্য দিয়ে সাহায্য করেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা। বাজারদরের চেয়ে কম খরচে থাকার ব্যবস্থা করে দেন তারা।
বড় শহরগুলোয় অ্যাপার্টমেন্টের ভাড়া স্বাভাবিকভাবেই বেশি। এটা ৩০০ থেকে ১ হাজার ইউরো হতে পারে। সাধারণত অন্তত এক বছরের জন্য ভাড়া নিতে হয়। তবে বিশ্ববিদ্যালয় শহরগুলোয় স্বল্প মেয়াদে আসবাব সজ্জিত কক্ষ ভাড়া পাওয়া যায়। পুরো অ্যাপার্টমেন্ট ভাড়া না নিয়ে একটি কক্ষও ভাড়া নিতে পারেন শিক্ষার্থীরা। অবশ্য পত্রিকার বিজ্ঞাপন দেখে কিংবা রিয়েল এস্টেট এজেন্সির সঙ্গে যোগাযোগ করেও আবাসনের ব্যবস্থা করে নেয়া যায়।
আবহাওয়া : ইউরোপের মূল ভূখ- থেকে বুটের মতো করে ভূমধ্যসাগরে বেরিয়ে আসা ভূখ- হচ্ছে ইতালি। উত্তর ও দক্ষিণাঞ্চলের আবহাওয়ায় তাই কিছুটা তফাত দেখা যায়। উষ্ণ গ্রীষ্ম এবং শীতল শীতকাল উত্তর ইতালির বৈশিষ্ট্য। তবে শীতকালে দিনের তাপমাত্রা সচরাচর হিমাঙ্কের নিচে নামে না। আর দক্ষিণাঞ্চলে শীতের প্রভাব ততটা বেশি নয়। গ্রীষ্মকালটা শুষ্ক এবং বেশ গরম। তবে পার্বত্য অঞ্চলগুলোয় দীর্ঘ শীতকাল পরিলক্ষিত হয়।
ইতালি যাওয়া : ইউরোপ এবং সারা বিশ্বের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ শহরগুলোর সঙ্গে সরাসরি ফ্লাইট আছে। এছাড়া লন্ডন, আমস্টার্ডাম, ফ্রাঙ্কফুর্ট এবং প্যারিস হয়েও ইতালি প্রবেশ করা যায়। বোলোগনা, ফ্লোরেন্স, নেপলস ইত্যাদি শহরের বিমানবন্দরগুলোর সঙ্গে ইউরোপের বিভিন্ন শহরের সরাসরি বিমান যোগাযোগ আছে। বেশকিছু সাশ্রয়ী বিমান সংস্থাও ফ্লাইট পরিচালনা করছে ইতালিতে।
ইউরোপের শহরগুলো থেকে রেল বা বাসে চড়েও ইতালি যাওয়া যায়। ইতালিজুড়ে বিস্তৃত সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা থাকায় সাধারণ গাড়িতে চড়েই দেশটির বিভিন্ন প্রান্তে পৌঁছে যাওয়া যায়।
পড়াশোনার জন্য ইতালি প্রবেশের ক্ষেত্রে যা প্রয়োজন : ভিসা সহকারে পাসপোর্ট;
নগদ অর্থ, ট্রাভেলার্স চেক, ক্রেডিট কার্ড, ইত্যাদি;
বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির অনুমতিপত্র;
প্রয়োজনীয় হেলথ ডকুমেন্ট;
ইতালি থাকার জন্য প্রয়োজনীয় অর্থ আছে তার প্রমাণপত্র;
এছাড়া সংশ্লিষ্ট বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনার জন্য আরও কোনো কাগজপত্র লাগবে কিনা, সেদিকে লক্ষ রাখতে হবে।
পড়াশোনার জন্য : পড়াশোনার জন্য ইতালি প্রবেশ করতে ইউরোপীয় শিক্ষার্থীদের ভিসা লাগে না। কিন্তু ইউরোপের বাইরের দেশ হওয়ায় বাংলাদেশের শিক্ষার্থীদের ভিসা প্রয়োজন হয় এবং সেটা ইতালি যাওয়ার আগেই সংগ্রহ করতে হয়।
ইতালি প্রবেশের ৮ দিনের মধ্যে পুলিশকে অবহিত করতে হবে, বাড়িভাড়া নেয়ার পূর্বশর্ত এটি।
কেমন পোশাক নিতে হবে : চারটি ঋতুর প্রভাব অনুভূত হয় পুরো ইতালিতেই। তবে উত্তর ও দক্ষিণাঞ্চলের মধ্যে আবহাওয়ায় কিছুটা পার্থক্য আছে। দক্ষিণে শীত ততটা প্রবল না হলেও উত্তরে বেশ শীত পড়ে। পুরো ইতালিতেই গ্রীষ্মকালটা বেশ উষ্ণ। তবে গ্রীষ্মের দৈর্ঘ্য দক্ষিণে তুলনামূলক বেশি। বসন্ত এবং শরতে বৃষ্টি বেশি হয়, উত্তরাঞ্চল তুলনামূলকভাবে বেশি আর্দ্র।
কি ধরনের পোশাক নিতে হবে সে সংক্রান্ত পরামর্শ বিশ্ববিদ্যালগুলোর তরফ থেকে দেয়া হয়। তবে উত্তর বা দক্ষিণÑ গন্তব্য যেখানেই হোক না কেন, শীতের পোশাক কিছুটা লাগবেই।
শিক্ষার্থীদের জন্য বিশেষ সেবা : বিদেশে পড়তে যাওয়াজনিত একটি উত্তেজনা শিক্ষার্থীদের মাঝে কাজ করে ঠিকই, কিন্তু নতুন জায়গায় গিয়ে কিছুটা ছন্দপতন ঘটতে পারে। নতুন দেশের জীবনযাপন পদ্ধতির সঙ্গে মানিয়ে নেয়া কঠিন হতে পারে। একটি পর্যায়ে প্রায় সব শিক্ষার্থীই গৃহকাতর বা হোমসিক হয়ে পড়ে। এসব পরিস্থিতিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ইন্টারন্যাশনাল অফিসের সঙ্গে কথা বলা যেতে পারে। অধিকাংশ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা কার্যক্রমের শুরুতে একটি পরিচিতিমূলক কর্মসূচি থাকে। বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা ও সেবা সম্পর্কে অবহিত করা হয় শিক্ষার্থীদের।
যাতায়াত : ইতালির গণপরিবহন ব্যবস্থা বেশ ভালো এবং সস্তা। ইতালির শহরগুলোয় যাতায়াতের জন্য গণপরিবহনই উত্তম পন্থা। কারণ পার্কিং ও সড়কপথের টোল এখানে খুব বেশি। গণপরিবহনে চড়তে একটি টিকিট কিনলে খরচ বেশি পড়বে। এক সপ্তাহ বা এক মাসের টিকিট একসঙ্গে কেনা সাশ্রয়ী। বাসে কোনো টিকিট বিক্রি করা হয় না। পত্রিকা বা সিগারেট বিক্রেতারা এসব টিকিট বিক্রি করে। ট্রেনে বা বাসে চড়ার আগেই টিকিটে সিল নিতে হবে।
জীবনযাত্রার ব্যয় : ইতালির বড় শহর, পর্যটন শহর, বিশেষ করে উত্তরাঞ্চলের শহরগুলোয় জীবনযাত্রার ব্যয় তুলনামূলক বেশি।
থাকা-খাওয়া, যাতায়াত, টেলিফোন এবং অন্যান্য খরচসহ একজন শিক্ষার্থীর মাসিক ব্যয় ১ হাজার থেকে ১ হাজার ৫০০ ইউরো হতে পারে। (২০১৪ সালে ইতালির সরকারি ওয়েবসাইট থেকে প্রাপ্ত তথ্য)।
বাংলাদেশের মতো ইউরোপের বাইরের দেশ থেকে যারা যাবেন, তারা যাওয়ার আগেই বেসরকারি স্বাস্থ্য বীমার ব্যবস্থা করতে পারবেন। ইতালিতে স্বাস্থ্য বীমার সুবিধা পাওয়া যাবে কিনা আগেই ইতালি দূতাবাস থেকে সে সম্পর্কে নিশ্চিত হতে হবে। ইতালির চিকিৎসাসেবা এমনিতে বেশ ব্যয়বহুল।
পড়াশোনার পাশাপাশি কাজ : ইউরোপীয় শিক্ষার্থীরা ওয়ার্ক পারমিট ছাড়াই কাজ করতে পারে ইতালিতে। কিন্তু বাংলাদশে বা ইউরোপের বাইরের অন্যান্য দেশের শিক্ষার্থীদের জন্য কাজের সুযোগ কম। শিক্ষার্থীদের জন্য ওয়ার্ক পারমিট জোগাড় করাটা বেশ কঠিন। একটি নিয়োগপত্র পুলিশকে দিতে হয়। কাজটা করতে হয় চাকরিদাতাকেই। আবার অনেক ক্ষেত্রে ভিসায় কাজ করার অনুমতি দেয়া হয় না।
এখন ইতালিতে সরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ৫৮টি, সরকার অনুমোদিত বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ১৭টি এবং বিদেশিদের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় দুইটি।
সেমিস্টার পদ্ধতি ও অন্যান্য : দুই সেমিস্টার মিলিয়ে এক শিক্ষাবর্ষ ধরা হয় ইতালিতে। প্রথম সেমিস্টার শুরু হয় সেপ্টেম্বর-অক্টোবরে আর শেষ হয় জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারিতে। দ্বিতীয় সেমিস্টার শুরু হয় ফেব্রুয়ারিতে আর শেষ হয় জুলাইয়ে। ঠিক কোন তারিখে সেমিস্টার শুরু হবে সেটা বিশ্ববিদ্যালয়ের ওপর নির্ভর করে। প্রতি সেমিস্টারের দৈর্ঘ্য ২০ সপ্তাহ। ১৪ সপ্তাহ ক্লাসের জন্য আর ৬ সপ্তাহ পরীক্ষার জন্য বরাদ্দ থাকে।
বছরে গড়ে ৮৫০ থেকে ১ হাজার ইউরো খরচ হবে। তবে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর খরচ অনেক বেশি হয়ে থাকে। বৃত্তি, আর্থিক সাহায্য, আবাসনসহ অন্যান্য ক্ষেত্রে ইতালীয় এবং বিদেশি শিক্ষার্থীদের জন্য একই নিয়ম প্রযোজ্য। শিক্ষার্থীর প্রয়োজন ও ফলাফলই বিবেচনার মাপকাঠি।